চিকিৎসা সেবার নামে অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী, প্রতারণা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে কক্সবাজার সদরের সী সাইড হসপিটালের এমডি ডাঃ রফিকুল ইসলাম, ডাঃ আনিসা ও সতর মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (গাইনী) ডাঃ আসাদুজ্জামান এর বিরুদ্ধে আদালতে ফৌজদারী মামলার আবেদন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ১৫ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার মধ্যম বাহারছড়ার সিরাজুল ইসলাম কোম্পানির পুত্র তৌহিদুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে আদালতে ফৌজদারি মামলার আবেদন দায়ের করেন।
কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত (সদর) এর বিচারক তামান্না ফারাহ্ ফৌজদারি মামলার আবেদনটি আমলে নিয়ে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমানকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদেশ দেন।
ফৌজদারী মামলার আবেদন সূত্রে জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর তৌহিদুল ইসলাম খোকন এর স্ত্রী ইফতেসাম আক্তারকে ডা. আসাদুজ্জামানের পরামর্শে ডেলিভারি করানোর জন্য সী সাইড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভর্তি করানোর সময় হাসপাতালের হিসাব শাখায় ৫ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়।
একইদিন বিকেল ৫ টার দিকে ডা. আনিসা নামক একজন মেডিকেল অফিসার এসে তার স্ত্রীকে স্যালাইন দেন। রাত ৮ টার দিকে প্রসব যন্ত্রনা শুরু হলে সাড়ে ৯ টার দিকে ডা. আসাদুজ্জামান, ডা. আনিসা, ডা. রফিকুল ইসলাম এসে তার স্ত্রীকে সিজার করানোর কথা বলে ৫০ হাজার টাকা চাদা দাবি করেন। তখন তার স্ত্রীকে নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য তাদেরকে অনুরোধ করেন। অভিযুক্ত তিন ডাক্তার বিভিন্ন কূটকৌশল অবলম্বন করে ৫০ হাজার টাকা দাবিতে অটল থাকে।
এক সময় ডাক্তারদের কথায় বাদী রাজী না হওয়ায় আসামীরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে ভয়ভীতি প্রদর্শন পূর্বক প্রসব যন্ত্রনায় তার স্ত্রীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া বন্ধ করে দেন। কোন উপায় না পেয়ে হয়ে তার স্ত্রীকে সীসাইড হাসপাতাল থেকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ডুলাহাজারা মালুমঘাট খৃষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম নেয়।
আইনজীবী এডভোকেট রমিজ আহমদ জানান,
ফৌজদারী মামলার আবেদনে দন্ডবিধি ৪২০ (প্রতারণা), ৩৮৫ (চাঁদাবাজি) ও ৫০৬-বি (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এর অভিযোগে ৩ জনকে সাক্ষী রেখে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
এর আগেও চিকিৎসা সেবার নামে রোগীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সিজার করতে বাধ্য করা, মূল বিলের পাশাপাশি ভুতুড়ে বিল বানিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা সহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ভুতুড়ে বিলের সত্যতা পেয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন সী সাইড হসপিটালকে।